নরসিংদীর মনোহরদীর গোতাশিয়া ইউপি নির্বাচনে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (০৬ ডিসেম্বর) সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন নরসিংদীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেছবাহ উদ্দিন।
এর আগে, গতকাল রোববার বিকেলে মতিউর রহমানের করা আপিল নিষ্পত্তি শেষে তার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। চতুর্থ ধাপে গোতাশিয়া ইউপিতে আগামী ২৬ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মতিউর রহমান গোতাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় প্রথমেই তার নাম ছিল। ওই তালিকায় নাম থাকা অন্য দুজন হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বরকত ও সিনিয়র সহসভাপতি আলতাফ হোসেন মাস্টার। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মতিউর রহমানকে নৌকার প্রার্থী করা হয়।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেছবাহ উদ্দিন জানান, ২৯ নভেম্বর ছিল চতুর্থ ধাপের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন। ওই দিন দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তা নাজমুল আনোয়ারের কাছে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলেন।
পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় তিনি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আপিল করলে গতকাল বিকেলে তা নিষ্পত্তি শেষে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয় বলে জানান তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, যাচাই-বাছাই চলাকালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের চ্যালেঞ্জ করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আবুল বরকত। আবুল বরকত তাকে চ্যালেঞ্জ করেন, আপনি একজন ট্যাক্সদাতা হিসেবে আপনার টিন সার্টিফিকেট মনোনয়নপত্রে নেই কেন?
মতিউর রহমান জবাব দেন, তিনি ট্যাক্সদাতা নন। এরপরেই আবুল বরকত তার সঙ্গে থাকা মতিউর রহমানের টিন সার্টিফিকেট বের করে মনোনয়ন বোর্ডে জমা দেন। পরে সেটি যাচাই করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মতিউর রহমানের মনোনয়ন অবৈধ বলে ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ওই ইউপির রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাজমুল আনোয়ার জানান, মনোনয়নপত্র বাছাইকালে বিধি মোতাবেক প্রার্থী, প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীরা উপস্থিত ছিলেন। মতিউর রহমান একজন করদাতা হয়েও তিনি তার মনোনয়নপত্রে তা উল্লেখ করেননি, যা বিধিবহির্ভূত।
মতিউর রহমান জানান, একটি ভুলের কারণে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকৃতপক্ষে এই ভুলের কারণে মনোনয়ন বাতিল হতে পারে না, এটা সংশোধনযোগ্য। কিন্তু আপিল বোর্ড আমাকে কোনো সুযোগ দেয়নি। মনে হচ্ছে, সামথিং ইজ রং। এই ব্যাপারে আমি আইনি পদক্ষেপ চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমানের মনোনয়ন বাতিলের পর নির্বাচনের মাঠে আছেন মাত্র দুজন প্রার্থী। তাদের একজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আবুল বরকত ও অন্যজন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শাহাবুদ্দীন।