শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বাংলাদেশের মুখপত্রে আপনাকে স্বাগতম।
শিরোনাম :
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক উপর বর্বর ও পরিকল্পিত হামলার ঘটনা  আওয়ামীলীগ নোতাকে নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন শ্রীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধেরে জেরে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি মূলক মামলা ও হামলার হুমকির   অভিযোগ  ব্রাহ্মণপাড়ায় আব্দুল মতিন খসরু মহিলা ডিগ্রী কলেজ ও মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী কলেজের এইচ, এস, সি পরীক্ষারর্থীদের বিদায় মুরাদনগরে সন্ত্রাসীদের হুমকিতে অবরুদ্ধ একটি পরিবার প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মৃত্যু নৈঃশব্দ্যের নিমগ্ন ডুব— ঈশিতা ইমু মানবতার বিরুদ্ধে ইসরায়েল এর হামলা ১১৭ ফিলিস্তিনি নিহত চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ

বর্তমানে আক্রান্তদের ২০ শতাংশেরই ওমিক্রন

বাংলাদেশের মুখপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের ২০ শতাংশই বর্তমানে ওমিকন ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত। তবে চলতি মাসে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা গুণিতক হারে বাড়ার আশঙ্কা করেছে গবেষকরা।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জেনােম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপােষক (সুপারভাইজার) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাে. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কেভিড-১৯ এর জেনােম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য কেভিড-১১ এর জেনােমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশনের ধরন এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জেনােমের সঙ্গে এর আন্তঃসম্পর্ক বের করা এবং বাংলাদেশি কোভিড-১৯ জেনােম ডাটাবেজ তৈরি করা। এ প্রতিবেদন বিএসএমএমইউ-এর চলমান গবেষণার ৬ (ছয়) মাস ১৫ (পনের) দিনের ফলাফল, আমরা আশা করি পরবর্তী সপ্তাহগুলােতে হালনাগাদকরা ফলাফল জানাতে পারব।

২৯ জুন ২০২১ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত সারা দেশব্যাপী রােগীদের ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেশের সব বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করা হয়। গবেষণায় মােট ৭৬৯ কোভিড-১৯ পজিটিভ রােগীর ন্যাযযাফ্যারিনজিয়াল সােয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করােনাভাইরাসের জেনােম সিকোয়েন্সিং করা হয়।

বিএসএমএমইউ’র গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রােগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রােগীদের সংখ্যা বেশি। যেহেতু কোনো বয়সসীমাকেই কোভিড ১৯-এর জন্য ইমিউন করছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ রয়েছে।

গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, কোভিড আক্রান্ত রােগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন- ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রােগ, হৃদরােগ, ডায়াবেটিস তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি পেয়েছিলাম। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব বয়সের রােগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।

কোভিড-১৯-এর জেনােম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ গবেষণায় জুলাই ২০২১ এ দেখা যায়, মােট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ, ১ শতাংশ রােগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছি মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট। জুলাই ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২১-এর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জিনােম সিকোয়েন্স এ প্রাপ্ত ডাটা অনুযায়ী ৯৯.৩১ শতাংশ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট, একটি করে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন- আলফা বা ইউকে ভ্যারিয়েন্ট এবং বেটা বা সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট এবং অন্য একটি স্যাম্পল এ শনাক্ত হয় 20B ভ্যারিয়েন্ট, যা SARS-COV-2-এর একটি ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট। ৮ ডিসেম্বর ২০১১ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত সংগৃহীত স্যাম্পলের ২০ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০ শতাংশ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। পরবর্তী মাসে এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতক হারে বৃদ্ধির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। প্রকৃত ফলাফল আমরা এ মাসেই আপনাদের অবগত করবাে।

ওমিক্রন ভাইরাস ডায়াগনােসিসের জন্য আরটিপিসিআর -এর মাধ্যমে ৩টি জিন- S, N2, E দেখা হয় (BBC রিসার্স)। এর মধ্যে S জিনটি ডিটেকটেড না হলে ওমিক্রনের সম্ভাবনা বেশি, কিন্তু WIJO Guidlines অনুসারে জিনােম সিকোয়েন্সিং-এর মাধ্যমে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কনফার্ম করতে হবে।

ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে অনেক বেশি ইনফেকশন ছড়াচ্ছে বলে প্রতিয়মান। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসের জেনেটিক কোড এ ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি ডিলিশন মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রােটিন রয়েছে। এই স্পাইক প্রােটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশির ভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। স্পাইক প্রােটিনের বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরেও ওমিক্রন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।

আমাদের জিনােম সিকোয়েন্সিংয়ের কোনো কোনাে ওমিক্রন আক্রান্ত রােগীর দুই ডােজ ভ্যাকসিন দেওয়া ছিল।

তৃতীয়বারের মত সংক্রমণ রােগী পাওয়া গেছে
হাসপাতালে ভর্তিরােগী থেকে সংগ্রহিত স্যাম্পলে আমার জিনােম সিকোয়েন্স করে পেয়েছি ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট। যেহেতু ওমিক্রন সংক্রমণে মৃদু উপসর্গ হয়েছে, সেটা হাসপাতালে ভর্তি রােগীতে ওমিক্রন না পাবার কারণ হতে পারে।

পাশাপাশি মৃদু উপসর্গের রােগীদের মধ্যে টেস্ট না করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। তাই আমাদের প্রাপ্ত ফলাফলের চেয়েও অনেক বেশি ওমিক্রন আক্রান্ত রােগী undetected অবস্থায় আছে বলে মনে করছি।

প্রত্যেক করােনা ভাইরাস ভ্যারিয়েন্ট বিপদজনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও কারণও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশনের আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পাওে তাই করােনা সংক্রমণ প্রতিরােধে স্বাস্থ্যবিধি ও টিকা গ্রহণ করতে হবে।

করােনা জেনােম সিকোয়েন্সিংয়ের গবেষণায় সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাে. শরফুদ্দিন আহমেদ। প্রধান গবেষক ছিলেন ডা. লায়লা আনজুমান বানু, অধ্যাপক, জেনেটিক্স অ্যান্ড মলিকিউলার বায়ােলজি ও চেয়ারম্যান, এনাটমি বিভাগ, বিএসএমএমইউ।

এছাড়া গবেষণা টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- ডা. জিন্নাত আরা ইয়াসমীন, সহযােগী অধ্যাপক, এনাটমি বিভাগ, ডা. বিষ্ণু পদ দে, সহকারী অধ্যাপক, প্যাথলজি বিভাগ, ডা. মাে. মহিউদ্দিন মাসুম, সহকারী অধ্যাপক, এনাটমি বিভাগ, ডা. ইলােরা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি বিভাগ, ডা. আবিদা সুলতানা, রেসিডেন্ট, ফেইজ- বি, এনাটমি বিভাগ, নাহিদ আজমীন, এমফিল, থিসিস, এনাটমি বিভাগ, অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ভাইরােলজি বিভাগ, সােয়েব হােসেন, মেডিক্যাল টেকনােলজিস্ট, জেনােম রিসার্চ সেন্টার, বিএসএমএমইউ, শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাস, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট, জেনােম রিসার্চ সেন্টার, বিএসএমএমইউ, অমল গনপতি, ফ্ল্যাবােটমিষ্ট, ল্যাবরেটরি সার্ভিস সেন্টার, বিএসএমএমইউ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর