আসন্ন পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে যশাই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বাবা ও ছেলে। একই পদে বাবা-ছেলের লড়াইয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।
বাবা আব্দুল হাকিম খান যশাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি এবার নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে। আর ছেলে আবু হোসেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হয়েছেন।
বাবা-ছেলে ছাড়াও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও চারজন প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান (আনারস), জাকের পার্টির প্রার্থী আল মামুন (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন ও শাজাহান মিয়া।
যশাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাধিক কর্মী বলেন, বাপ-বেটা দুইজনই আওয়ামী লীগের। ছেলে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছে আর বাবা দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী হয়েছে। দুইজনের একই পদে প্রার্থী হওয়ায় আমরা স্থানীয় নেতাকর্মীরা পড়েছি বিপদে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হাকিম খান বলেন, আমি এই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলাম। দল থেকে আমাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় আমি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছি। এলাকায় আমার ভালো জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণাকালে আমাকে নানাভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল। তিনি জানান, গভীর রাতে নৌকার সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন। এটি কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনের অংশ নয়। বিষয়টি তিনি নির্বাচনী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী আবু হাসান বলেন, আমার বাবা যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নির্বাচন থেকে তার সড়ে দাঁড়নোর কথা ছিলো। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন তিনি তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কথা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তার কর্মী-সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
পাংশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল আলীম বলেন, কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে এখনও অভিযোগ পাইনি। এছাড়াও এবার যশাই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বাবা-ছেলে লড়ছেন।
নির্বাচান অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারী পাংশা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ হবে। এই নির্বাচনে ৪৯ জন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৯ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০৭ জন অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও নির্বাচনে মোট ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।