শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বাংলাদেশের মুখপত্রে আপনাকে স্বাগতম।
শিরোনাম :
মান্দায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আটক ১ শ্রীনগরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে ঘর নির্মাণের চেষ্টা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক উপর বর্বর ও পরিকল্পিত হামলার ঘটনা  আওয়ামীলীগ নোতাকে নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন শ্রীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধেরে জেরে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি মূলক মামলা ও হামলার হুমকির   অভিযোগ  ব্রাহ্মণপাড়ায় আব্দুল মতিন খসরু মহিলা ডিগ্রী কলেজ ও মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী কলেজের এইচ, এস, সি পরীক্ষারর্থীদের বিদায় মুরাদনগরে সন্ত্রাসীদের হুমকিতে অবরুদ্ধ একটি পরিবার প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মৃত্যু নৈঃশব্দ্যের নিমগ্ন ডুব— ঈশিতা ইমু

শতবর্ষেও ঢাবি শিক্ষার্থীদের নানান আক্ষেপ

বাংলাদেশের মুখপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২১

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে স্বাধীন জাতিসত্তা বিকাশের লক্ষ্যে বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই থেকে বাঙালি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী অনেকেই শহীদ হয়েছেন। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান এখানে পড়াশোনা করেছেন এবং বাংলাদেশ স্বাধীন করতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশেষ অবদান ছিল। এটি বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এশিয়া উইকের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নেয়।

নানা অর্জন থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের আক্ষেপও আছে। প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ আবাসিক সুবিধা পাননি শিক্ষার্থীরা। আছে আরও নানান আক্ষেপ। শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, আক্ষেপ ও ভাবনা তুলে ধরেছেন ঢাকা পোস্টের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আমজাদ হোসেন হৃদয়

ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকবর হোসাইন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী অতীত নিয়ে আমরা গর্ব করি। তবে অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যোগসূত্র তৈরি করে আরও সমৃদ্ধ হতে  হবে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যেই গুণগত পরিবর্তন দরকার, সময়ের সাথে এগিয়ে চলার যে গতি তা যেন অনেকটাই শ্লথ হয়ে গেছে। শতবর্ষের আলোয় আলোকিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরও একবার আলোকিত করুক সমাজ, দেশ ও দেশের মানুষকে এই প্রত্যাশা করি।

ঢাবির শতবর্ষপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন আজ

অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে হোসাইন বলেন, ইতিহাসের পাতায় আর এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই, যা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের মানচিত্র এঁকে দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আবাসিক সমস্যার সমাধান, শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিকতাবোধ তৈরি, হলের খাবারের মানোন্নয়ন, সুস্থ রাজনীতির চর্চা, ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক কাজে জটিলতার সমাধান, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত সুবিধাসহ ক্যাম্পাস হোক জ্ঞান অর্জন, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার উদ্যান। আমাদের প্রত্যাশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এসব সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে দারুণভাবে এগিয়ে যাবে এবং নতুন ইতিহাস রচনা করবে।

শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা জানিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, এ দেশের সকল সংকটময় মুহূর্তে মুক্তির পথ দেখানো বিশ্ববিদ্যালয়টি শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসেও পুরোপুরি শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি। শত বর্ষের পূর্তিতে প্রত্যাশা থাকবে সকল বাঁধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মানোন্নয়ন ঘটিয়ে এবং পরিপূর্ণভাবে আবাসন সংকট দূর করার মাধ্যমে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে গড়ে উঠবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আক্ষেপ প্রকাশ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জোহরা এলি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটি বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিয়তই অনেক কিছু শিখছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, শতবর্ষে এসেও আমরা আমাদের গবেষণাখাতে মনোযোগ বাড়ানো কিংবা গণরুমের মতো বিষয়গুলোর সমাধান করতে পারছি না। পারছি না সকল শ্রেণিকক্ষে প্রযুক্তির মান নিশ্চিত করতে।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জামিন মিয়া বলেন, যেখানে রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম দেয়, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেটি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু আবাসন সংকট, ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা পদ্ধতি ও পর্যাপ্ত গবেষণার অভাবের বিষয়গুলো আমাকে ভীষণ পীড়া দেয়। তাই অন্তত শতবর্ষে এসে এগুলোতে কর্তৃপক্ষ নজর দেবে, সেই প্রত্যাশাই করছি।

প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী তানি তামান্না বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ যতটা উজ্জ্বল হওয়া দরকার ছিল, এই অগণিত আলোর ঝলকানি তার কিছুই দিতে পারেনি। এই প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় একদিন যতটা গৌরব বহন করেছিল, আজকাল তারচে বেশিই যেন লেপ্টে যাচ্ছে কালিমায়। নিরাপদ, বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস, অবকাঠামোগত উন্নয়ন আর গবেষণা নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থায় অগ্রবর্তী হয়ে আবারও অনস্বীকার্য এবং অপরিহার্য হয়ে উঠুক এটাই প্রত্যাশা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর