মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
বাংলাদেশের মুখপত্রে আপনাকে স্বাগতম।
শিরোনাম :
শ্রীনগরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে ঘর নির্মাণের চেষ্টা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক উপর বর্বর ও পরিকল্পিত হামলার ঘটনা  আওয়ামীলীগ নোতাকে নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন শ্রীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধেরে জেরে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি মূলক মামলা ও হামলার হুমকির   অভিযোগ  ব্রাহ্মণপাড়ায় আব্দুল মতিন খসরু মহিলা ডিগ্রী কলেজ ও মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী কলেজের এইচ, এস, সি পরীক্ষারর্থীদের বিদায় মুরাদনগরে সন্ত্রাসীদের হুমকিতে অবরুদ্ধ একটি পরিবার প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মৃত্যু নৈঃশব্দ্যের নিমগ্ন ডুব— ঈশিতা ইমু মানবতার বিরুদ্ধে ইসরায়েল এর হামলা ১১৭ ফিলিস্তিনি নিহত

জাতিসংঘে ওআইসি ও ইইউ উত্থাপিত ‘রোহিঙ্গা রেজল্যুশন’ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত

বাংলাদেশের মুখপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাতিসংঘে প্রথম বারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজল্যুশন গৃহীত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক খুদেবার্তার মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।

জাতিসংঘে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজল্যুশনটি গ্রহণকালে দেওয়া বক্তৃতায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজল্যুশন, যা এই সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।’

রেজল্যুশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলা হয়, ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা এবং জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উদারতা ও মানবিকতা দেখিয়েছে, রেজল্যুশনটিতে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। কক্সবাজারের জনাকীর্ণ আশ্রয় ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ভাষানচরে স্থানান্তর এবং এ লক্ষ্যে এখানে অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তৈরি করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যে প্রচেষ্টা ও বিনিয়োগ করেছে তারও স্বীকৃতি দেওয়া হয় রেজল্যুশনটিতে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানানো হয়।’

রেজল্যুশনটিতে প্রাথমিকভাবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপটের মতো বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরুপণ প্রক্রিয়ায় সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।

রেজল্যুশনে মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করে তাঁর জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের কথাও বলা হয়েছে।

রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে মিয়ানমার, ইউএনএইচসিআর এবং ইউএনডিপি’র মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারকটি নবায়ন ও এর কার্যকর বাস্তবায়ন করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে রেজল্যুশনটিতে।

রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক বিবেচনায় ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেন। কিন্তু, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমার ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’

প্রত্যাবাসনের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের হতাশা ক্রমেই তীব্র হচ্ছে, যা এ অঞ্চলে নানা ধরনের নিরাপত্তাজনিত উদ্‌বেগ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আরও বলেন, ‘আশা করা যায় এবারের রেজুল্যুশনটি নিজভূমি মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে যা দীর্ঘস্থায়ী এ সমস্যার টেকসই সমাধানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এবারের রেজল্যুশনটিতে ১০৭টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে যে সংখ্যা ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ইইউ ও ওআইসি ছাড়াও এতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশ সমর্থন যুগিয়েছে এবং সহ-পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।

সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এবারের রোহিঙ্গা রেজল্যুশনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘একটি শক্তিশালী ম্যান্ডেট নিয়ে এবারের রেজল্যুশন গৃহীত হলো, যা রোহিঙ্গাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করবে। যে জন্য তারা পথ চেয়ে বসে আছে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর