প্রায় পাঁচ মাস ধরে চালিয়ে আসা অনশন অবশেষে ভেঙেছেন ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনি হিশাম আবু হাওয়াশ। ইসরায়েল তার আটকের মেয়াদ নতুন করে না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানোর পর অনশন ভাঙতে রাজি হয়েছেন ৪০ বছর বয়সী হিশাম।
হিশামের পরিবার ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তরা অবশ্য বলছেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তির কথা এখনও জানায়নি ইসরায়েল।
২০২০ সালের অক্টোবরে হিশামকে আটক করে ইসরায়েল। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই তাকে আটকের প্রতিবাদে তখন থেকেই অনশন চালিয়ে আসছিলেন তিনি।
ইসরায়েলি একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হিশাম ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিসেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হিশামকে। হিশাম যদি মারা যায় তবে ইসরায়েলে হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছিল দ্য ইসলামিক জিহাদ। গেল বছরের মে মাসে গাজাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ১১ দিনের সহিংসতার স্মৃতি নতুন করে জাগিয়ে তুলেছিল ওই হুমকি।
ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতিয়েহ টুইটারে লিখেছেন, নিজের ইচ্ছাশক্তির জোরে স্বাধীনতা লাভের জন্য আমরা মুক্ত আবু হাওয়াশকে অভিনন্দন জানাই।
হিশামের আইনজীবী জাওয়াদ বৌলস বলছেন, ইসরায়েল হিশামকে আটকের মেয়াদ ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখের পর আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল মিসর। এ সিদ্ধান্ত আসার পর অধিকৃত পশ্চিম তীরে হিশামের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে উল্লাস করেন বেশ কজন।
হিশামের পরিবার বলছে, হিশামকে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তিনি তা মেনে নিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের মুখপাত্র, সেখানকার নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট, সেনাবাহিনী, কারাগার কর্তৃপক্ষ কেউই বিষয়টি নিয়ে কেনো মন্তব্য করেনি।
হিশামকে যেভাবে আটকে রাখা হয়েছে একই উপায়ে আরও কয়েকশো ফিলিস্তিনিকে আটকে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের হাতে এই বন্দিদের কোনো অভিযোগ ছাড়াই ৬০ দিন পর্যন্ত আটক রাখার ক্ষমতা রয়েছে। এরপর আদালতের অনুমোদন পেলে আটকের মেয়াদ আরও বাড়ানো যাবে।
ইসরায়েল বলে, যেসব ক্ষেত্রে বিচারের জন্য পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে না ও আদালতে গেলে গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেসব ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রয়োজন।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এর নিন্দা জানিয়ে আসছে।
সূত্র : রয়টার্স।