আদম মালেক:
সুশাসন মেনেই ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে মধুমতি ব্যাংক পি এল সি। অধিক মুনাফার আশায় অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে কখনো বিতরণ করেনি আগ্রাসি ঋণ। এগিয়ে আছে সকল আর্থিক সূচকে। এজন্য মধুমতি ব্যাংক সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু বলে মন্তব্য করেছেন টানা চতুর্থবারের মতো নিয়োগপ্রাপ্ত মধুমতি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. সফিউল আজম।
এ পদে তিনি প্রথম নিয়োগ পেলেন ২০১৬ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি । ১৯৯১ সালে এবি ব্যাংকে শিক্ষানবিশ অফিসার হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সফিউল আজম। তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদেরকে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ এখন খেলাপি যা ব্যাংক খাতের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। এই খেলাপির একটি বড় কারণ ঋণ বিতরণের সময় গ্রাহক বাছাইয়ে ভুল করা। ঋণ বিতরণ করেই দায়িত্ব শেষ হয় না। গ্রাহকের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমের ঋণ আদায়ে যত্নবান হতে হয়।
ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনায় মধুমতি ব্যাংকের বিশেষত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, অধিক মুনাফার আশায় কখনো অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়নি মধুমতি ব্যাংক। বিতরণ করেনি আগ্রাসি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে ঋণ-আমানত অনুপাত। এতে আমাদের মুনাফা কম কিন্তু বিনিয়োগ নিরাপদ। প্রতিষ্ঠানে সবসময় ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা রাখার চেষ্টা করছে।
মধুমতি ব্যাংক সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,গেল বছর বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে ১২-১৩টি ব্যাংক হিসাব চূড়ান্ত করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে মধুমতি ব্যাংক অন্যতম। প্রতিটি ব্যাংকের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত হার অনুযায়ী ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ মূলধন রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে কিন্তু মধুমতি ব্যাংকের আছে ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। ব্যাংকটিতে নেই কোনো প্রভিশন ঘাটতি। খেলাপি ঋণের হার মাত্র ২.৩ শতাংশ। আয়ের বিপরীত খরচ ৩৫ শতাংশ।
ব্যাংকটির আর্থিক সূচক সম্পর্কে এই এই ব্যাংকার আরো বলেন, ২০২৪ সালে মধুমতি ব্যাংকের নিট মুনাফা ১২৬ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল ১১০ কোটি টাকা। আমানতের পরিমাণ ৮ হাজার ৫ শ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ ৮ হাজার কোটি টাকা।
এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঋণ বিতরণে মধুমতি ব্যাংকের কাছে রপ্তানি খাত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে আমদানি রপ্তানি খাতে মধুমতি ব্যাংকের যথেষ্ট সফলতা আছে। ২০২৪ সালে এই ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ হাজার কোটি টাকার আমদানি রপ্তানি ব্যবসা হয়েছে। এ সকল আর্থিক সূচকে অগ্রগতির কারণে মধুমতি ব্যাংক সাড়ে পাঁচ লাখ গ্রাহকের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সফিউল আজম বলেন, শুধু মুনাফা অর্জন নয় সামাজিক দায়বদ্ধতমূলক কর্মকাণ্ডেও অবদান রাখছে মধুমতি ব্যাংক। অগ্রাধিকার খাতগুলো বেছে বেছে এই ব্যাঙ্ক সহযোগিতা করে থাকে। বহু স্কুল কলেজ ও মসজিদকে সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশ আই হাসপাতালের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ৪ টি জোনের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসা দিয়ে থাকে মধুমতি ব্যাংক।