বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০০ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বাংলাদেশের মুখপত্রে আপনাকে স্বাগতম।

বীমা কোম্পানিগুলোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বিদেশী রিইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আসতে চায় না -আবুল কালাম আজাদ

বাংলাদেশের মুখপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আদম মালেক 

বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় বীমা কোম্পানির সংখ্যা বেশি। মুনাফা অর্জনের আশায় অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত অনেক কোম্পানি। অতিরিক্ত কমিশনের কারণে পুনবীমা করার সক্ষমতা থাকে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের, প্রতারিত হয় গ্রাহক। এজন্য অনেক বিদেশি পুনঃবিমা কোম্পানি বাংলাদেশ আসতে চায় না বলে জানিয়েছেন তাকাফুল ইসলামি ইন্স্যুরেন্স পিএলসির মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
বীমা খাত বিকাশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বীমা কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেশি । রাজনৈতিক কারণেও অনেক কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। দেশে ৪৬ টি সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠান আছে। কোম্পানির পরিমানের তুলনায় ব্যবসার আকার তেমন বড় নয়। এই জন্য মুনাফার আশায় অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বহু বীমা কোম্পানি। এসব কোম্পানিতে লেনদেন হয় বড় অংকের অবৈধ কমিশনের। সরকার নির্ধারিত কমিশন ১৫ শতাংশ অথচ কখনো কখনো ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ কমিশনা কোম্পানিগুলোকে পরিশোধ করতে হয়। এতে পুনবিমা করার সক্ষমতা থাকে না অনেক কোম্পানির। দামি পরিষদের সক্ষমতা হারিয়ে বলে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো। গ্রাহকরা প্রতারিত হয়। বিদেশী রিইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশে আসতে চায় না। তাছাড়া বীমা করার পর অনেক বীমা গ্রহীতার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই ধরনের অগ্নিসংযোগও বাংলাদেশের ব্যাপারে বিদেশি রিইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর অনাগ্রহের আরেকটি কারণ । বর্তমানে বাংলাদেশের বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশের প্রথম শ্রেণীর রিইন্সুরেন্স কোম্পানির কাছে বীমা করতে পারে না। পুনবীমার জন্য পিছিয়ে পড়া কোম্পানিগুলোর কাছে তাদের দ্বারস্থ হতে হয়।
বাংলাদেশী ইসলামী বীমার সম্ভাবনা ও বিকাশের অন্তরায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাফল্যে বাংলাদেশে ইসলামী বিমার সম্ভাবনার জাগিয়ে তোলে। ২০০১ সালে ইসলামি বীমা প্রতিষ্ঠিত হলে আজও ইসলামী বীমার জন্য কোনো ইসলমী আইন প্রণীত হয়নি। গেল বছর ইসলামী বীমার জন্য তৈরি আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয় জমা দেওয়া হলে আজও তা ঝুলে আছে।

অবৈধ কমিশনজনিত সংকট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় বাতলে দিতে গিয়ে এই বীমা ব্যক্তিত্ব বলেন, নৈতিক চিন্তার উন্নতি না হলে যত আইন প্রণয়ন করা হোক না কেন তা কোনো কাজে আসবে না। চিন্তার উন্নতি ঘটাতে হবে। বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে,তারা অতিরিক্ত কমিশন দেব না। এই নীতিগত সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অবৈধ কমিশন রোধ সম্ভব।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাধারণ বীমা খাতের আরেকটি সমস্যা হলো, দেশে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ছাড়া অন্য কোন রিইন্সুরেন্স কোম্পানি নেই। দেশের সাধারণ বীমার একচেটিয়া আধিপত্য। দেশে নতুন রিইন্সুরেন্স কোম্পানি গড়ে না উঠলে সাধারণ বীমার কারসাজি থেকে বেরিয়ে আসা যাবেনা।
বীমা কোম্পানিগুলোর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বাজারে ভুয়া বীমা কোম্পানি আবির্ভাব ঘটেছে। এই কোম্পানি বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা(আইডিআরএ) অনুমোদন করেনি। অথচ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রিমিয়াম নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি লাপাত্তা। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা আমাদের সুনামও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ধরনের কোম্পানি সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিদেশে বিমার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা থাকলও বাংলাদেশের অনেক খাতই বিমার আওতায় আসেনি। বিদেশে টিভি ফ্রিজসহ ঘরে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের জন্যও বীমা হয় কিন্তু বাংলাদেশে তা কল্পনাও করা যায় না। বাংলাদেশের মৎস্য ও গবাদি পশুর বিশাল বাজার আছে।এগুলোকে বীমার আওতায় নিয়ে আনতে পারলে বিমা খাত অনেক সমৃদ্ধ হবে।
তাকাফুল ইসলাম ইন্সুরেন্সের সফলতা ও সম্ভাবনায় উচ্ছ্বসিত এই বীমা ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, যথাসময়ে দাবি পরিশোধ করে তকাফুল ইসলামী ইন্সুরেন্স। দাবি পরিশোধে কোন দুর্নাম নেই প্রতিষ্ঠানটির। গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সূচকে এগিয়ে আছে এই বীমা কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ৪২ কোটি, প্রকৃতি সম্পদ মূল্য ১৩২ কোটি ও ব্যাংক স্থায়ী আমানত ৭১ কোটি টাকা। প্রধান কার্যালয়ের তিনটি ফ্লোর কোম্পানি নিজস্ব। সব মিলিয়ে কোম্পানির অর্থনৈতিক ভিত্তি অনেক শক্তিশালী

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর